বিজনেস ভ্যালুয়েশন অ্যানালিস্টের ভূমিকা: যা না জানলে চরম ভুল করবেন!

webmaster

기업가치평가사 직무 분석 - **Prompt:** A focused male or female business valuation analyst, in their late 20s to early 30s, dre...

বন্ধুগন, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই সুস্থ এবং ভালো আছেন। আজ আমি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে কথা বলতে এসেছি, যা হয়তো অনেকের কাছেই নতুন, কিন্তু বর্তমান কর্পোরেট জগতে এর গুরুত্ব অপরিসীম। আপনারা কি কখনো ভেবে দেখেছেন, একটি কোম্পানির আসল মূল্য কিভাবে নির্ধারণ করা হয়?

기업가치평가사 직무 분석 관련 이미지 1

শুধু লাভ-ক্ষতির হিসাব দেখেই কি সবটা বোঝা সম্ভব? না, এর পেছনে কাজ করে একদল বিশেষজ্ঞ, যাদের বলা হয় ‘বিজনেস ভ্যালুয়েশন অ্যানালিস্ট’ বা উদ্যোগ মূল্য নির্ধারণ বিশ্লেষক। আমি নিজে যখন বিভিন্ন বিনিয়োগ বা অধিগ্রহণ প্রস্তাবনা নিয়ে কাজ করি, তখন এই বিশ্লেষকদের গভীর অন্তর্দৃষ্টির গুরুত্ব হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করি। বিশেষ করে, আজকের দ্রুত পরিবর্তনশীল ডিজিটাল অর্থনীতিতে স্টার্টআপ এবং প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর সঠিক মূল্য নির্ধারণ করাটা আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে শুধু আর্থিক নয়, বরং উদ্ভাবন এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ওপরও জোর দেওয়া হয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ডেটা অ্যানালিটিক্সের মতো আধুনিক প্রযুক্তি কিভাবে এই পেশার গতিপথ বদলে দিচ্ছে, সেটাও বেশ আকর্ষণীয়। এই পেশার ভবিষ্যৎ কী, কিভাবে আপনিও এই ক্ষেত্রে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে পারেন এবং এর জন্য কী ধরনের দক্ষতা প্রয়োজন, সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাহলে আর দেরি কেন?

চলুন, উদ্যোগ মূল্যায়ন বিশ্লেষকদের এই জটিল অথচ দারুণ জগৎ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া যাক!

আজকের যুগে ব্যবসার মূল্য বোঝার গুরুত্ব

কেন একটি কোম্পানির সঠিক মূল্য জানা জরুরি?

বন্ধুরা, আপনারা হয়তো ভাবছেন, একটি ব্যবসার মূল্য নির্ধারণ করা আর এমন কী কঠিন কাজ? লাভ-ক্ষতির হিসাব, সম্পদ আর দায় মিলিয়ে দিলেই তো হয়ে গেল! কিন্তু বিশ্বাস করুন, ব্যাপারটা মোটেও এত সহজ নয়। আমি যখন প্রথম এই পেশায় আসি, তখন আমারও এমনটা মনে হতো। কিন্তু যত দিন গড়িয়েছে, তত আমি উপলব্ধি করেছি যে, একটি কোম্পানির সঠিক মূল্য জানাটা শুধু বিনিয়োগের জন্যই নয়, বরং অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের জন্য অপরিহার্য। ধরুন, আপনি আপনার কোম্পানি বিক্রি করতে চাইছেন, অথবা নতুন কোনো কোম্পানি কিনতে যাচ্ছেন। যদি আপনি সঠিক মূল্য না জানেন, তাহলে হয়তো কম দামে বিক্রি করে ফেলবেন বা বেশি দামে কিনে লোকসানে পড়বেন। এমনকি, অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত যেমন নতুন প্রকল্প শুরু করা, শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া, অথবা কোনো অংশীদারিত্বে যাওয়া — সব ক্ষেত্রেই সঠিক মূল্যায়ন একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করে। আমি আমার কর্মজীবনে বহুবার দেখেছি, সঠিক মূল্যায়নের অভাবে বহু চমৎকার উদ্যোগও ভুল পথে পরিচালিত হয়েছে। একটি কোম্পানির প্রকৃত বাজার মূল্য এবং তার অভ্যন্তরীণ মূল্যের মধ্যে পার্থক্য বোঝাটা তাই খুবই জরুরি। বিশেষ করে, যখন বাজার অস্থির থাকে, তখন এই বিশ্লেষণ আরও জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

অর্থনীতিতে উদ্যোগ মূল্য নির্ধারণের প্রভাব

ব্যবসার মূল্য নির্ধারণ শুধু নির্দিষ্ট একটি কোম্পানির জন্য নয়, বরং সামগ্রিক অর্থনীতির জন্যও বিশাল প্রভাব ফেলে। যখন একটি দেশের বেশিরভাগ কোম্পানি সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয়, তখন বিনিয়োগকারীরা সঠিক তথ্য নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, যা পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা বাড়ায়। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, স্বচ্ছ এবং নির্ভুল মূল্যায়ন ব্যবস্থা একটি সুস্থ অর্থনৈতিক পরিবেশের জন্ম দেয়। এটা নতুন বিনিয়োগকে উৎসাহিত করে, উদ্যোক্তাদের নতুন কিছু শুরু করার সাহস যোগায়, এবং সর্বোপরি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করে। যখন বিনিয়োগকারীরা জানে যে তারা একটি ন্যায্য মূল্যে বিনিয়োগ করছে, তখন তারা আস্থা পায়। এর ফলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় এবং অর্থনৈতিক চাকা আরও দ্রুত ঘুরতে থাকে। বিশেষ করে, স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে, যেখানে অনেক সম্ভাবনাময় কিন্তু কম পরিচিত কোম্পানি থাকে, সেখানে সঠিক মূল্যায়ন তাদের তহবিল জোগাড় করতে এবং টিকে থাকতে সাহায্য করে। আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, যখন একটি স্টার্টআপ সঠিক মূল্যায়ন পায়, তখন তার কর্মীদের মধ্যেও এক নতুন উদ্দীপনা আসে, কারণ তারা জানে যে তাদের পরিশ্রমের ফল মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

একজন উদ্যোগ মূল্যায়ন বিশ্লেষকের কাজ কী?

বিশ্লেষকদের দৈনন্দিন কার্যপ্রণালী

আপনারা হয়তো ভাবছেন, একজন বিজনেস ভ্যালুয়েশন অ্যানালিস্টের সারাদিনের কাজটা কী? সত্যি বলতে, তাদের কাজটা বেশ বৈচিত্র্যময় এবং চ্যালেঞ্জিং। আমি নিজে যখন এই ধরনের প্রজেক্টে জড়িত থাকি, তখন দেখি যে একজন বিশ্লেষককে শুধুমাত্র আর্থিক ডেটা নিয়ে কাজ করতে হয় না, বরং অনেক গবেষণা এবং বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। তাদের প্রধান কাজ হলো একটি ব্যবসার প্রকৃত অর্থনৈতিক মূল্য নির্ধারণ করা। এর জন্য তারা বিভিন্ন আর্থিক মডেল তৈরি করে, বাজারের ট্রেন্ড বিশ্লেষণ করে, এবং কোম্পানির ভবিষ্যত সম্ভাবনার উপর ভিত্তি করে পূর্বাভাস দেয়। উদাহরণস্বরূপ, একটি কোম্পানির বিগত পাঁচ বছরের আর্থিক প্রতিবেদন, নগদ প্রবাহ, ব্যালেন্স শীট, এবং আয় বিবরণী পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখা তাদের কাজের অংশ। এরপর তারা ডিসকাউন্টেড ক্যাশ ফ্লো (DCF), কমপারেবল কোম্পানি অ্যানালাইসিস (CCA), এবং প্রেসিডেন্স ট্রানস্যাকশন অ্যানালাইসিস (PTA) এর মতো বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে। আমার মনে আছে একবার একটি ছোট টেক স্টার্টআপের মূল্যায়ন করতে গিয়ে আমি তাদের উদ্ভাবনী প্রযুক্তি এবং ভবিষ্যৎ বাজার দখল করার সম্ভাবনার উপর অনেক বেশি জোর দিয়েছিলাম, যা শুধু তাদের বর্তমান আর্থিক চিত্র দেখে সম্ভব হতো না।

Advertisement

বিভিন্ন শিল্পে তাদের ভূমিকা

এই বিশ্লেষকদের ভূমিকা শুধু একটি নির্দিষ্ট শিল্পে সীমাবদ্ধ নয়। বিভিন্ন ধরনের শিল্পে তাদের সমানভাবে প্রয়োজন হয়। যেমন, একটি ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির মূল্যায়ন একরকম, আবার একটি সফটওয়্যার কোম্পানির মূল্যায়ন সম্পূর্ণ ভিন্ন। এর কারণ হলো, প্রতিটি শিল্পের নিজস্ব কিছু বিশেষত্ব এবং ঝুঁকি থাকে। ফিনান্সিয়াল সার্ভিস, রিয়েল এস্টেট, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্যসেবা, উৎপাদন – সব খাতেই ভ্যালুয়েশন অ্যানালিস্টদের চাহিদা ব্যাপক। আমি নিজে যখন বিভিন্ন সেক্টরের ক্লায়েন্টদের সাথে কাজ করি, তখন দেখি তাদের ব্যবসার মডেল, রাজস্ব প্রবাহ, এবং বৃদ্ধির সম্ভাবনার উপর ভিত্তি করে মূল্যায়নের পদ্ধতিও পাল্টে যায়। টেক কোম্পানিগুলোর জন্য তাদের বৌদ্ধিক সম্পত্তি এবং ভবিষ্যৎ উদ্ভাবনের সম্ভাবনা একটি বড় ফ্যাক্টর, যেখানে ঐতিহ্যবাহী শিল্পগুলোর জন্য তাদের বিদ্যমান সম্পদ এবং বাজার অংশীদারিত্ব বেশি গুরুত্বপূর্ণ। একজন সফল বিশ্লেষককে তাই বিভিন্ন শিল্পের সূক্ষ্মতা সম্পর্কে গভীর জ্ঞান রাখতে হয়। এই বহুমুখিতাই এই পেশাকে আমার কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।

সফল উদ্যোগ মূল্যায়ন বিশ্লেষক হতে যে দক্ষতাগুলি প্রয়োজন

প্রয়োজনীয় একাডেমিক এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা

একজন সফল বিজনেস ভ্যালুয়েশন অ্যানালিস্ট হতে হলে শুধুমাত্র আর্থিক জ্ঞান থাকলেই চলে না, বরং কিছু বিশেষ একাডেমিক এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতার প্রয়োজন হয়। প্রথমত, ফিনান্স, অ্যাকাউন্টিং, ইকোনমিক্স বা বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে একটি শক্তিশালী ব্যাকগ্রাউন্ড থাকা অপরিহার্য। আমি দেখেছি, যারা এই বিষয়গুলোতে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন, তারা খুব দ্রুত এই পেশায় মানিয়ে নিতে পারেন। এছাড়া, আর্থিক মডেলিংয়ে পারদর্শী হওয়া অত্যন্ত জরুরি। এক্সেল (Excel) এর মতো স্প্রেডশীট প্রোগ্রামে গভীর জ্ঞান এবং অ্যাডভান্সড ফাংশন ব্যবহারের ক্ষমতা থাকা অত্যাবশ্যক। ডেটা অ্যানালাইসিস টুলস যেমন পাইথন (Python) বা আর (R) সম্পর্কে ধারণা থাকলে তা অতিরিক্ত সুবিধা যোগ করে। এই টুলসগুলো ব্যবহার করে বিশাল ডেটাসেট বিশ্লেষণ করা এবং সঠিক অন্তর্দৃষ্টি বের করা সম্ভব হয়। আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, যখন আমি জটিল মডেল তৈরি করি, তখন এক্সেলের অ্যাডভান্সড ফিচারগুলো আমাকে অনেক সাহায্য করে। এছাড়া, টার্মিনাল বা ব্লুমবার্গ (Bloomberg) এর মতো ফিনান্সিয়াল ডেটাবেস ব্যবহারের দক্ষতাও খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সঠিক ও নির্ভরযোগ্য ডেটা ছাড়া কোনো মূল্যায়নই সম্ভব নয়।

যোগাযোগ এবং বিশ্লেষণাত্মক ক্ষমতা

শুধু টেকনিক্যাল দক্ষতা থাকলেই হবে না, একজন ভালো বিশ্লেষককে শক্তিশালী যোগাযোগ এবং বিশ্লেষণাত্মক ক্ষমতাও রাখতে হবে। এই পেশায় আপনাকে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সাথে কথা বলতে হবে—ক্লায়েন্ট, বিনিয়োগকারী, আইনজীবী এবং অন্যান্য আর্থিক পেশাদার। তাই আপনার বিশ্লেষণগুলিকে স্পষ্ট এবং সংক্ষিপ্তভাবে ব্যাখ্যা করার ক্ষমতা থাকা খুবই জরুরি। আমি যখন কোনো ক্লায়েন্টের সামনে আমার বিশ্লেষণ উপস্থাপন করি, তখন চেষ্টা করি যাতে তারা সহজ ভাষায় আমার মূল্যায়নের পেছনের যুক্তিগুলো বুঝতে পারে। জটিল আর্থিক ধারণাগুলোকে সহজভাবে বোঝানোর এই ক্ষমতা একজন বিশ্লেষকের পেশাদারিত্বের প্রমাণ। এছাড়া, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা থাকা জরুরি। অনেক সময় ডেটা অসম্পূর্ণ থাকে বা অপ্রত্যাশিত সমস্যা দেখা দেয়, তখন একজন বিশ্লেষককে নিজের বিচারবুদ্ধি খাটিয়ে সঠিক সমাধান বের করতে হয়। আমার মনে আছে একবার একটি ভ্যালুয়েশন প্রজেক্টে ডেটার অভাব ছিল, তখন আমি ভিন্ন অ্যাপ্রোচ নিয়ে সমস্যাটির সমাধান করেছিলাম, যা ক্লায়েন্টদের খুব পছন্দ হয়েছিল।

মূল্যায়ন কৌশল এবং পদ্ধতি

Advertisement

বিভিন্ন ভ্যালুয়েশন মডেলের ব্যবহার

বিজনেস ভ্যালুয়েশন অ্যানালিস্টরা বিভিন্ন ধরনের ভ্যালুয়েশন মডেল ব্যবহার করে একটি ব্যবসার মূল্য নির্ধারণ করে। এর মধ্যে কিছু জনপ্রিয় মডেল হলো ডিসকাউন্টেড ক্যাশ ফ্লো (DCF) পদ্ধতি, অ্যাসেট-বেসড ভ্যালুয়েশন (Asset-Based Valuation), এবং মার্কেট মাল্টিপলস (Market Multiples) অ্যাপ্রোচ। ডিসকাউন্টেড ক্যাশ ফ্লো পদ্ধতিতে, একটি কোম্পানির ভবিষ্যতের নগদ প্রবাহ অনুমান করে সেগুলোকে বর্তমান মূল্যে নিয়ে আসা হয়, যা আমাকে প্রায়শই ব্যবহার করতে হয়। অ্যাসেট-বেসড ভ্যালুয়েশন হলো কোম্পানির সমস্ত সম্পদ এবং দায় বিবেচনা করে মূল্য নির্ধারণ করা। এটি সাধারণত সেইসব কোম্পানির জন্য বেশি প্রযোজ্য যাদের ভৌত সম্পদ বেশি। অন্যদিকে, মার্কেট মাল্টিপলস অ্যাপ্রোচে, একই শিল্পে থাকা অন্যান্য তুলনীয় কোম্পানির বাজার মূল্যের সাথে আপনার কোম্পানির তুলনা করা হয়। আমি যখন কোনো দ্রুত বর্ধনশীল স্টার্টআপের মূল্যায়ন করি, তখন প্রায়শই DCF এবং মার্কেট মাল্টিপলস পদ্ধতিগুলোকে একত্রিত করে ব্যবহার করি, কারণ তাদের ভৌত সম্পদের চেয়ে ভবিষ্যৎ বৃদ্ধির সম্ভাবনাই বেশি থাকে। প্রতিটি পদ্ধতির নিজস্ব সুবিধা এবং সীমাবদ্ধতা আছে, তাই পরিস্থিতি অনুযায়ী সঠিক পদ্ধতি বেছে নেওয়াটাই একজন বিশ্লেষকের আসল দক্ষতা।

বাজারের ডেটা এবং ট্রেন্ড বিশ্লেষণ

সঠিক মূল্যায়ন করতে হলে শুধু মডেল ব্যবহার করলেই চলে না, বরং বাজারের ডেটা এবং ট্রেন্ড সম্পর্কেও গভীর জ্ঞান রাখতে হয়। অর্থনীতির গতিবিধি, শিল্পের বিশেষ প্রবণতা, নিয়ন্ত্রক পরিবর্তন এবং এমনকি ভূ-রাজনৈতিক ঘটনাগুলোও একটি ব্যবসার মূল্যের উপর প্রভাব ফেলে। একজন ভালো বিশ্লেষককে নিয়মিতভাবে বাজারের খবর এবং অর্থনৈতিক সূচকগুলো অনুসরণ করতে হয়। আমি যখন কোনো ভ্যালুয়েশন প্রজেক্টে কাজ করি, তখন শুধু কোম্পানির আর্থিক ডেটাই দেখি না, বরং সেই শিল্পে কী ঘটছে, নতুন প্রযুক্তি কী আসছে, এবং ভোক্তাদের আচরণ কীভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে, সেদিকেও নজর রাখি। এই ধরনের তথ্যের উপর ভিত্তি করে একটি কোম্পানির ভবিষ্যতের বৃদ্ধি এবং ঝুঁকির বিষয়ে আরও বাস্তবসম্মত অনুমান করা সম্ভব হয়। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো নতুন প্রযুক্তি আসে যা একটি শিল্পের পুরানো পদ্ধতিকে অপ্রচলিত করে দেয়, তাহলে সেই শিল্পের কোম্পানিগুলোর ভবিষ্যৎ নগদ প্রবাহের অনুমান পরিবর্তন করতে হবে। বাজারের ডেটা এবং ট্রেন্ড বিশ্লেষণ আমাকে আরও নির্ভরযোগ্য এবং বাস্তবসম্মত মূল্যায়ন করতে সাহায্য করে।

আপনার ক্যারিয়ারের পথ: একজন উদ্যোগ মূল্য নির্ধারণ বিশ্লেষক হিসেবে

প্রবেশের পথ এবং প্রাথমিক অভিজ্ঞতা

যদি আপনি একজন উদ্যোগ মূল্য নির্ধারণ বিশ্লেষক হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাহলে আপনার জন্য কিছু নির্দিষ্ট পথ রয়েছে। সাধারণত, ফিনান্স বা অ্যাকাউন্টিং ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা প্রার্থীরা ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং ফার্ম, কনসাল্টিং ফার্ম, প্রাইভেট ইক্যুইটি ফার্ম, বা কর্পোরেট ফিনান্স ডিপার্টমেন্টে এন্ট্রি-লেভেল পদে যোগ দিতে পারেন। আমি যখন প্রথম এই ফিল্ডে আসি, তখন একটি ছোট কনসাল্টিং ফার্মে জুনিয়র অ্যানালিস্ট হিসেবে কাজ শুরু করেছিলাম। সেখানে আমি সিনিয়র অ্যানালিস্টদের সাথে কাজ করে বিভিন্ন ভ্যালুয়েশন মডেল তৈরি করা এবং ডেটা বিশ্লেষণের প্রাথমিক ধাপগুলো শিখেছিলাম। ইন্টার্নশিপের অভিজ্ঞতা এই পেশায় প্রবেশ করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি সব সময় নতুনদের ইন্টার্নশিপ করার পরামর্শ দিই, কারণ এর মাধ্যমে বাস্তব অভিজ্ঞতা লাভ করা যায় এবং নেটওয়ার্ক তৈরি হয়। প্রাথমিক বছরগুলোতে কঠোর পরিশ্রম, শেখার আগ্রহ এবং চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার মানসিকতা আপনাকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। এই সময়টাতে আপনি বিভিন্ন ধরনের শিল্প এবং কোম্পানির সাথে পরিচিত হবেন, যা আপনার জ্ঞানকে আরও সমৃদ্ধ করবে।

ক্যারিয়ারের অগ্রগতি এবং বিশেষজ্ঞতা

একজন ভ্যালুয়েশন অ্যানালিস্ট হিসেবে আপনার ক্যারিয়ারের অগ্রগতি মূলত আপনার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং শেখার আগ্রহের উপর নির্ভর করে। জুনিয়র অ্যানালিস্ট থেকে আপনি সিনিয়র অ্যানালিস্ট, তারপর অ্যাসোসিয়েট, এবং ম্যানেজার পদে উন্নীত হতে পারেন। অনেকেই শেষ পর্যন্ত ভ্যালুয়েশন ডিরেক্টর বা পার্টনার পর্যন্ত পৌঁছান। এই যাত্রাপথে আপনি বিশেষ কোনো শিল্পে বা কোনো বিশেষ ধরনের মূল্যায়নে বিশেষজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন। যেমন, কেউ হয়তো টেক স্টার্টআপ ভ্যালুয়েশনে বিশেষজ্ঞ হবেন, আবার কেউ রিয়েল এস্টেট ভ্যালুয়েশনে। এই বিশেষীকরণ আপনাকে নির্দিষ্ট একটি ক্ষেত্রে আরও গভীর জ্ঞান অর্জন করতে সাহায্য করবে এবং আপনার বাজার মূল্য বাড়াবে। আমি নিজে যখন এই ক্ষেত্রে কাজ করছি, তখন দেখেছি যে যারা নিজেদেরকে ক্রমাগত আপগ্রেড করেন এবং নতুন প্রযুক্তি ও পদ্ধতির সাথে পরিচিত হন, তারাই সবচেয়ে সফল হন। সার্টিফাইড ফিনান্সিয়াল অ্যানালিস্ট (CFA) বা অ্যাক্রেডিটেড ইন ভ্যালুয়েশন (ABV) এর মতো পেশাদার সার্টিফিকেশন আপনার ক্যারিয়ারকে আরও গতিশীল করতে পারে। এই ধরনের সার্টিফিকেশনগুলি আপনার দক্ষতা এবং পেশাদারিত্বের প্রমাণ হিসেবে কাজ করে।

প্রযুক্তি কীভাবে উদ্যোগ মূল্যায়নকে বদলে দিচ্ছে

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ডেটা অ্যানালিটিক্সের প্রভাব

আমরা সবাই জানি যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং ডেটা অ্যানালিটিক্স এখন প্রতিটি শিল্পে বিপ্লব ঘটাচ্ছে, এবং উদ্যোগ মূল্যায়নের ক্ষেত্রটিও এর বাইরে নয়। আমার মনে হয়, এই প্রযুক্তিগুলো এই পেশার ভবিষ্যতকে সম্পূর্ণ নতুন দিকে নিয়ে যাচ্ছে। AI এবং মেশিন লার্নিং মডেলগুলো বিশাল ডেটাসেট থেকে প্যাটার্ন এবং প্রবণতা খুঁজে বের করতে পারে, যা মানুষের পক্ষে দ্রুত এবং নিখুঁতভাবে করা প্রায় অসম্ভব। এর ফলে, ভ্যালুয়েশন অ্যানালিস্টরা আরও নির্ভুল এবং বিস্তারিত পূর্বাভাস দিতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, AI ব্যবহার করে বাজার মূল্যের ওঠানামা, গ্রাহকের আচরণ এবং অর্থনৈতিক সূচকগুলির মধ্যে সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা যায়, যা ঐতিহ্যবাহী মডেলগুলির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। আমি নিজে যখন দেখি AI কিভাবে জটিল মডেলিংকে সহজ করে দিচ্ছে, তখন অবাক না হয়ে পারি না। ডেটা অ্যানালিটিক্স টুলসগুলো অ্যানালিস্টদেরকে রিয়েল-টাইম ডেটা ব্যবহার করে আরও দ্রুত এবং প্রাসঙ্গিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। এটি মূল্যায়নের প্রক্রিয়াকে আরও দক্ষ এবং নির্ভরযোগ্য করে তোলে। এর ফলে, অ্যানালিস্টরা ডেটা সংগ্রহের পেছনে কম সময় ব্যয় করে বিশ্লেষণের গভীরতায় বেশি মনোযোগ দিতে পারেন।

স্বয়ংক্রিয় সরঞ্জাম এবং উন্নত মডেলিং

AI এবং ডেটা অ্যানালিটিক্সের পাশাপাশি, স্বয়ংক্রিয় সরঞ্জাম এবং উন্নত মডেলিং কৌশলগুলো ভ্যালুয়েশন প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করে তুলছে। এখন অনেক সফটওয়্যার আছে যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে আর্থিক ডেটা সংগ্রহ করতে পারে, মডেল তৈরি করতে পারে এবং এমনকি প্রাথমিক ভ্যালুয়েশন রিপোর্টও তৈরি করতে পারে। আমি যখন এই ধরনের সরঞ্জাম ব্যবহার করি, তখন দেখি যে এতে আমার সময় বাঁচে এবং আমি আরও জটিল বিশ্লেষণগুলিতে মনোযোগ দিতে পারি। যেমন, এখন আর ম্যানুয়ালি অনেক ডেটা ইনপুট দিতে হয় না, সফটওয়্যারই অনেক কিছু করে দেয়। এটি ভ্যালুয়েশন অ্যানালিস্টদেরকে আরও কৌশলগত কাজ করতে এবং জটিল ব্যবসার সমস্যাগুলির সমাধান করতে সক্ষম করে তোলে। তবে, এর মানে এই নয় যে মানুষের ভূমিকা কমে যাচ্ছে; বরং, মানুষের বিশ্লেষণী ক্ষমতা এবং অন্তর্দৃষ্টির গুরুত্ব আরও বাড়ছে, কারণ এই স্বয়ংক্রিয় সরঞ্জামগুলো চালানোর জন্য এবং তাদের ফলাফল ব্যাখ্যা করার জন্য মানুষের জ্ঞান অপরিহার্য। আমি বিশ্বাস করি, একজন সফল ভ্যালুয়েশন অ্যানালিস্টকে এই নতুন প্রযুক্তিগুলি ব্যবহার করতে জানতে হবে এবং সেগুলোর সাথে নিজেদের মানিয়ে নিতে হবে।

দক্ষতা ক্ষেত্র গুরুত্ব উদাহরণ
আর্থিক মডেলিং একটি ব্যবসার আর্থিক মূল্য নির্ধারণের ভিত্তি DCF মডেল, ক্যাশ ফ্লো বিশ্লেষণ
ডেটা বিশ্লেষণ বৃহৎ ডেটা সেট থেকে অন্তর্দৃষ্টি বের করা এক্সেল, পাইথন ব্যবহার করে বাজার গবেষণা
যোগাযোগ দক্ষতা জটিল বিষয়গুলি সহজভাবে ব্যাখ্যা করা ক্লায়েন্টদের কাছে ভ্যালুয়েশন রিপোর্ট উপস্থাপন
শিল্প জ্ঞান বিভিন্ন শিল্পের বিশেষত্ব বোঝা প্রযুক্তি বা রিয়েল এস্টেট শিল্পের প্রবণতা বিশ্লেষণ
সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা সমস্যা সমাধান এবং সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ অসম্পূর্ণ ডেটা নিয়ে ভ্যালুয়েশন করা
Advertisement

আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং কিছু পরামর্শ

এই পেশার চ্যালেঞ্জ এবং প্রাপ্তি

আমি আমার এই দীর্ঘ কর্মজীবনে একজন উদ্যোগ মূল্য নির্ধারণ বিশ্লেষক হিসেবে অনেক চ্যালেঞ্জ এবং তার সাথে অনেক প্রাপ্তিও দেখেছি। চ্যালেঞ্জগুলো সত্যিই কঠিন হতে পারে – যেমন, অসম্পূর্ণ ডেটা নিয়ে কাজ করা, বাজারের অস্থিরতা মোকাবেলা করা, বা ক্লায়েন্টদের উচ্চ প্রত্যাশা পূরণ করা। আমার মনে আছে একবার একটি জটিল মূল্যায়নের সময় ডেটার অভাব এতটাই প্রকট ছিল যে, আমি প্রায় হাল ছেড়ে দিতে বসেছিলাম। কিন্তু তখন আমি আমার অভিজ্ঞতার উপর ভরসা করে বিকল্প পদ্ধতি এবং অনুমান ব্যবহার করে কাজটি সফলভাবে সম্পন্ন করেছিলাম। এই ধরনের চ্যালেঞ্জগুলিই আমাকে আরও শক্তিশালী এবং অভিজ্ঞ করে তুলেছে। আর প্রাপ্তি?

যখন আপনি একটি কোম্পানির সঠিক মূল্য নির্ধারণ করতে পারেন এবং সেই মূল্যায়নের ভিত্তিতে একটি বড় চুক্তি সফল হয়, তখন সেই সন্তুষ্টি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমি যখন দেখি আমার বিশ্লেষণ ক্লায়েন্টদের সঠিক বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করছে, তখন সত্যিই গর্ব অনুভব করি। এই পেশা আপনাকে প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শিখতে বাধ্য করে এবং আপনার বিশ্লেষণাত্মক ক্ষমতাকে তীক্ষ্ণ করে তোলে।

নতুনদের জন্য কিছু মূল্যবান পরামর্শ

기업가치평가사 직무 분석 관련 이미지 2
যদি আপনি এই পেশায় নতুন আসতে চান, তাহলে আমার কিছু মূল্যবান পরামর্শ আছে। প্রথমত, শিক্ষার উপর জোর দিন। ফিনান্স এবং অ্যাকাউন্টিংয়ের মৌলিক ধারণাগুলো ভালোভাবে আয়ত্ত করুন। CFA বা ABV এর মতো সার্টিফিকেশনগুলো আপনাকে পেশাগতভাবে অনেক এগিয়ে রাখবে। দ্বিতীয়ত, প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন করুন। এক্সেল, পাইথন বা R এর মতো টুলসগুলোতে পারদর্শী হন। বর্তমান যুগে এই দক্ষতাগুলো ছাড়া টিকে থাকা কঠিন। তৃতীয়ত, নেটওয়ার্কিং করুন। বিভিন্ন ফিনান্সিয়াল ইভেন্টে যোগ দিন, অভিজ্ঞ পেশাদারদের সাথে পরিচিত হন এবং তাদের কাছ থেকে শিখুন। আমি আমার ক্যারিয়ারে দেখেছি, একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক কীভাবে নতুন সুযোগ তৈরি করে। চতুর্থত, শেখার মানসিকতা ধরে রাখুন। এই ক্ষেত্রটি প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে, তাই আপনাকেও নতুন প্রযুক্তি, নতুন পদ্ধতি এবং নতুন ট্রেন্ডের সাথে পরিচিত থাকতে হবে। সর্বোপরি, ধৈর্য ধরুন এবং নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন। এই পেশায় সফল হতে সময় লাগে, কিন্তু কঠোর পরিশ্রম এবং দৃঢ় সংকল্প আপনাকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেবেই। মনে রাখবেন, অভিজ্ঞতা একদিনে আসে না, প্রতিটি প্রজেক্ট এবং প্রতিটি চ্যালেঞ্জ আপনাকে নতুন কিছু শেখাবে।

글을মাচিয়ে

বন্ধুরা, আজ আমরা উদ্যোগ মূল্য নির্ধারণ বিশ্লেষক হিসেবে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আকর্ষণীয় পেশা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আমি আশা করি আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং এই ক্ষেত্রের খুঁটিনাটি আপনাদের ভালো লেগেছে। এই পেশাটি কেবল সংখ্যা নিয়ে খেলা নয়, বরং এটি একটি শিল্প, যেখানে গভীর বিশ্লেষণ, দূরদর্শিতা এবং সৃজনশীলতার প্রয়োজন হয়। আমি নিজে যখন কোনো জটিল মূল্যায়ন সফলভাবে সম্পন্ন করি, তখন যে আনন্দ পাই, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। মনে রাখবেন, শেখার কোনো শেষ নেই, বিশেষ করে এই দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে। তাই, আপনারা যারা এই অসাধারণ পেশায় নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়তে আগ্রহী, তারা যেন নিরন্তর শিখতে থাকেন এবং নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত থাকেন। আপনাদের মন্তব্য এবং প্রশ্ন জানান, আমি উত্তর দিতে প্রস্তুত!

Advertisement

알아두면 쓸মো 있는 তথ্য

১. নিয়মিত পড়াশোনা ও আপগ্রেডেশন: ফিনান্সিয়াল মার্কেট এবং ভ্যালুয়েশন পদ্ধতির পরিবর্তন সম্পর্কে সবসময় ওয়াকিবহাল থাকুন। নতুন অর্থনৈতিক মডেল, বাজারের ট্রেন্ড এবং নিয়ন্ত্রক পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে নিয়মিত পড়াশোনা করুন। সার্টিফিকেশন কোর্স যেমন CFA বা ACCA আপনাকে পেশাগতভাবে আরও সমৃদ্ধ করবে।

২. নেটওয়ার্কিং এবং মেন্টরশিপ: এই পেশায় সফল হতে হলে আপনার একটি শক্তিশালী পেশাদার নেটওয়ার্ক তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। বিভিন্ন সেমিনার, ওয়ার্কশপ এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইভেন্টে যোগ দিন। অভিজ্ঞ বিশ্লেষকদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলুন এবং তাদের কাছ থেকে শিখুন। একজন ভালো মেন্টর আপনার ক্যারিয়ারের গতিপথ বদলে দিতে পারে।

৩. প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং এবং ডেটা অ্যানালিটিক্স টুলস যেমন Python বা R সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করুন। এক্সেল-এ আরও গভীর দক্ষতা অর্জন করুন, কারণ এটি এখনও ভ্যালুয়েশন মডেলিংয়ের প্রধান হাতিয়ার। প্রযুক্তিগত দক্ষতা আপনাকে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখবে।

৪. বিভিন্ন শিল্পের জ্ঞান: শুধুমাত্র ফিনান্সের জ্ঞানই যথেষ্ট নয়, বিভিন্ন শিল্পের কাজ সম্পর্কেও ধারণা রাখুন। প্রযুক্তি, রিয়েল এস্টেট, উৎপাদন, স্বাস্থ্যসেবা – প্রতিটি শিল্পের নিজস্ব গতিপথ এবং মূল্যায়নের পদ্ধতি রয়েছে। এই বৈচিত্র্য আপনার বিশ্লেষণকে আরও বাস্তবসম্মত করবে।

৫. ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা অর্জন: ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে অথবা ছোটখাটো ভ্যালুয়েশন প্রজেক্টে অংশ নিয়ে ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা অর্জন করুন। তত্ত্বীয় জ্ঞানকে বাস্তবে প্রয়োগ করার মাধ্যমেই একজন বিশ্লেষক আসল দক্ষতা অর্জন করতে পারে। সরাসরি কাজ করার সুযোগ আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় 정리

এই ব্লগে আমরা একজন উদ্যোগ মূল্য নির্ধারণ বিশ্লেষকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, তাদের দৈনন্দিন কাজ এবং সফল হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি। এই পেশাটি বর্তমানে শুধু আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং দ্রুত বর্ধনশীল স্টার্টআপ এবং প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোতেও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

দক্ষতার গুরুত্ব

একটি কার্যকর মূল্যায়নের জন্য শুধুমাত্র একাডেমিক জ্ঞানই যথেষ্ট নয়, এর সাথে দরকার উন্নত প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং শক্তিশালী যোগাযোগ ক্ষমতা। একজন বিশ্লেষককে জটিল আর্থিক ডেটা বিশ্লেষণ করতে পারার পাশাপাশি সেই বিশ্লেষণকে সহজ এবং বোধগম্য ভাষায় উপস্থাপন করতে জানতে হয়। আমার অভিজ্ঞতা বলে, ক্লায়েন্টদের কাছে আপনার বিশ্লেষণকে পরিষ্কারভাবে তুলে ধরার ক্ষমতা আপনাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলবে।

প্রযুক্তির ভূমিকা

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ডেটা অ্যানালিটিক্সের মতো আধুনিক প্রযুক্তি এই পেশার গতিপথ বদলে দিচ্ছে। স্বয়ংক্রিয় সরঞ্জাম এবং উন্নত মডেলিং কৌশলগুলো মূল্যায়নের প্রক্রিয়াকে আরও নির্ভুল এবং দক্ষ করে তুলছে। তাই, একজন বিশ্লেষককে এই নতুন প্রযুক্তিগুলির সাথে নিজেদের পরিচিত করতে হবে এবং সেগুলোর সঠিক ব্যবহার শিখতে হবে। এর মাধ্যমে তারা ডেটা বিশ্লেষণে কম সময় ব্যয় করে আরও কৌশলগত সিদ্ধান্তে মনোযোগ দিতে পারবেন।

ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

উদ্যোগ মূল্য নির্ধারণ বিশ্লেষকদের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল। অর্থনৈতিক অস্থিরতা, নতুন উদ্ভাবন এবং বিশ্বায়নের কারণে কোম্পানিগুলোর সঠিক মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বাড়ছে। যারা নিজেদের ক্রমাগত আপগ্রেড করবেন, নতুন দক্ষতা অর্জন করবেন এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে প্রস্তুত থাকবেন, তারাই এই পেশায় দীর্ঘমেয়াদী সফলতা অর্জন করতে পারবেন। এটি এমন একটি পেশা যেখানে শেখার কোনো শেষ নেই এবং প্রতিনিয়ত নতুন কিছু আবিষ্কারের সুযোগ থাকে।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) 📖

প্র: একজন উদ্যোগ মূল্য নির্ধারণ বিশ্লেষক (Business Valuation Analyst) আসলে কী কাজ করেন এবং কেন তাদের প্রয়োজন হয়?

উ: দেখো বন্ধুরা, সহজ কথায় বলতে গেলে, একজন উদ্যোগ মূল্য নির্ধারণ বিশ্লেষক হলেন সেই ব্যক্তি যিনি একটি কোম্পানির আসল আর্থিক মূল্য কত, সেটা বের করেন। এটা শুধুমাত্র কোম্পানির লাভ-ক্ষতির হিসাব দেখে হয় না। তারা কোম্পানির সব কিছু পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করেন – যেমন, তাদের সম্পদ, দায়, ভবিষ্যৎ আয়ের সম্ভাবনা, বাজারের অবস্থা, প্রতিযোগিতার মাত্রা এবং এমনকি তাদের ব্র্যান্ড ভ্যালুও। ধরো, কোনো কোম্পানি অন্য একটি কোম্পানিকে কিনতে চাইছে অথবা কেউ নতুন করে কোনো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী, তখন এই বিশ্লেষকরাই বলে দেন যে সেই কোম্পানির জন্য সঠিক দাম কত হওয়া উচিত। আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, বিশেষ করে যখন কোনো স্টার্টআপ বা টেক কোম্পানি নিয়ে কাজ করি, তখন শুধু আর্থিক দিক নয়, তাদের উদ্ভাবনী শক্তি এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকেও মূল্যায়নে আনতে হয়, যা একজন অ্যানালিস্টের দক্ষতাই সম্ভব করে তোলে। তাদের ছাড়া বিনিয়োগকারীরা অন্ধের মতো অর্থ হারাবে আর কোম্পানিগুলোও তাদের ন্যায্য মূল্য পাবে না।

প্র: এই ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার গড়তে হলে কী কী দক্ষতা থাকা জরুরি এবং কিভাবে একজন নতুন ব্যক্তি এই পেশায় প্রবেশ করতে পারে?

উ: এই প্রশ্নের উত্তরটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ! আমার মনে হয়, এই পেশায় সফল হতে হলে কয়েকটি মূল দক্ষতা থাকা অত্যন্ত জরুরি। প্রথমত, আর্থিক মডেলিং এবং বিশ্লেষণাত্মক চিন্তাভাবনা। তোমাকে বিভিন্ন ডেটা এবং আর্থিক তথ্য থেকে গভীর অন্তর্দৃষ্টি বের করার ক্ষমতা থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, অ্যাকাউন্টিং, ফিনান্স এবং অর্থনীতি সম্পর্কে একটি শক্ত ভিত্তি। তৃতীয়ত, যোগাযোগের দক্ষতা – কারণ তোমাকে তোমার বিশ্লেষণগুলো ক্লায়েন্ট এবং ম্যানেজমেন্টের কাছে পরিষ্কারভাবে বোঝাতে হবে। আমি যখন নতুনদের সাথে কাজ করি, তখন দেখি অনেকেই এই তিনটি বিষয়ে জোর দেয় না। বর্তমান সময়ে, ডেটা অ্যানালিটিক্স টুলস এবং কিছু পরিমাণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার সম্পর্কে জানাও দারুণ প্লাস পয়েন্ট। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে, ফিনান্স বা অ্যাকাউন্টিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে শুরু করা যেতে পারে। এরপর CFA (Chartered Financial Analyst) বা ACCA-এর মতো পেশাদার সার্টিফিকেশনগুলো তোমাকে অন্যদের থেকে অনেক এগিয়ে রাখবে। ছোট ফিনান্সিয়াল ফার্মে ইন্টার্নশিপ করা বা জুনিয়র অ্যানালিস্ট হিসেবে কাজ শুরু করাটা খুব ভালো একটা উপায়। নিজে যখন ক্যারিয়ার শুরু করেছিলাম, তখন মনে হতো যেন একটা বিশাল সমুদ্রে সাঁতরাচ্ছি, কিন্তু প্রতিনিয়ত শেখার আগ্রহ আর সঠিক দক্ষতা অর্জনের চেষ্টা আমাকে এই জায়গায় এনেছে।

প্র: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং ডেটা অ্যানালিটিক্সের অগ্রগতির সাথে সাথে একজন উদ্যোগ মূল্য নির্ধারণ বিশ্লেষকের ভূমিকা কিভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে এবং এই পেশার ভবিষ্যৎ কেমন?

উ: এটি সত্যি বলতে কী, আজকের দিনের সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক প্রশ্নগুলির মধ্যে একটি! আমি নিজে দেখেছি, কিভাবে গত কয়েক বছরে AI এবং ডেটা অ্যানালিটিক্স আমাদের কাজকে আরও স্মার্ট করে তুলেছে। আগে যেখানে প্রচুর সময় শুধুমাত্র ডেটা সংগ্রহ এবং প্রাথমিক গণনার পেছনে ব্যয় হতো, এখন AI সেই কাজগুলো অনেক দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে করে দিচ্ছে। এর ফলে, একজন অ্যানালিস্ট হিসেবে আমাদের সময় বাঁচছে এবং আমরা আরও কৌশলগত বিষয়গুলিতে মনোযোগ দিতে পারছি। যেমন, বাজারের প্রবণতা বিশ্লেষণ করা, কোম্পানির গুণগত দিকগুলো আরও গভীরভাবে মূল্যায়ন করা এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনা নিয়ে আরও বাস্তবসম্মত অনুমান করা। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই পেশার ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল, তবে এর ধরন কিছুটা বদলে যাবে। শুধুমাত্র সংখ্যা নিয়ে কাজ করার পরিবর্তে, একজন অ্যানালিস্টকে এখন আরও বেশি সৃজনশীল এবং সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনার অধিকারী হতে হবে। AI হয়তো ডেটা সরবরাহ করবে, কিন্তু সে ডেটা থেকে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য মানুষের বিচারবুদ্ধি এবং অভিজ্ঞতা সবসময়ই অপরিহার্য থাকবে। তাই, যারা এই ক্ষেত্রে আসতে চাও, তাদের জন্য AI এবং ডেটা অ্যানালিটিক্স টুলসের সাথে পরিচিত থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি তোমার কাজকে আরও দক্ষ করে তুলবে এবং তোমাকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করবে।

📚 তথ্যসূত্র

Advertisement